আমি যে ব্লগিং করি বা গল্প লিখি তা অনলাইন পাঠক ছাড়া আর কেউ জানত না এতদিন। এমনকি আমার স্ত্রী ও জানেন না! গত সপ্তাহে আমার কলিগ (পাশের ডেস্কের - আমার সবচেয়ে কাছাকাছি) প্রথম জানতে পারেন আমি গল্প লিখেছি কয়েকটা। (উনি অবশ্য ব্লগিং এর ব্যাপরে আমাকে 'রিড-অনলি' পাঠক হিসাবে জানতেন। সে রকম ধারনাই দিয়েছিলাম তাকে।) কলিগকে যখন জানিয়েছিলাম আমি কয়েকটা গল্প লিখেছি তখন উনি একটু অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল। (আমার মত লোক গল্প লিখে!)
তো সেদিনই যাদুকর গল্পটি প্রকাশিত হয়েছিল। আমি উনাকে যাদুকর গল্পের লিংটি দিলাম। উনি প্রথম দু তিনটি প্যারা পড়েই 'আরে আপনি তো দারুন লিখেন!' বলে অতি উৎসাহে দ্রুত দাড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলেন আমার সাথে হ্যান্ডশেক করার জন্য! বোঝা গেল উনি আমার এহেন কর্মকান্ডে বেশ উত্তেজিত এবং বিষ্মিত! তারপর তিনি সবগুলো লেখাই একে একে পড়ে ফেললেন।
কলিগের সাথে কেনজানি আমার সবসময় টানপোড়ন চলতে থাকে। কিছুটা মিল মহব্বত, কিছুটা মনমালিন্য এভাবে দুজনেই একে অপরের উপর 'মনুষত্ব' ফলাই। বাসায় স্ত্রীর সাথে যেমন সবসময় খুনশুটি, রাগারাগি, দৈনন্দিন আলাপচারিতা বা চিৎকার চেচামেচি করে 'মনুষত্ব' দেখাই ঠিক সেরকমই। স্ত্রীর পর তিনিই আমার একেবারে কাছাকাছি ব্যাক্তি! সপ্তাহের পাঁচ দিন যে ব্যাক্তি আমার সাথে প্রায় ৪৫ ঘন্টা সময় ব্যায় করে সেতো আমার অতি নিকটজনই! তার সাথে 'মনুষত্ব' জাহির করবো নাতো কার সাথে করবো?
যাই হোক গল্পগুলো পড়ার পর উনার পাল্লায় আমার ওজন কিছুটা বেড়ে গেছে মনে হল। গল্পোত্তর ব্যবহারে আমার তাই মনে হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন পর আবার দুজন একসাথে চা খেতে গেলাম বাইরে।
অফিসের প্রায় সবার কাছেই আমি একজন 'কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ'। সবজান্তা ধরনের লোক। (উলুবনে শেয়াল রাজার মত আরকি!) সেদিনই বিকেলের দিকে আমার আরও একজন কলিগ আমারকাছে টেকনিক্যাল হেল্পএর জন্য এলেন। কি ভেবে তাকেও আমার গল্পের খবর জানালাম। একজন যেহেতু জানলেন বাকী সবাই জানতে অসুবিধা কোথায়? উনাকে আমার ব্লগের গল্পগুলো দেখালাম। উনি তৎক্ষনাৎ সবগুলো লেখায় চোখ বোলাতে শুরু করলেন। 'আপনি লিখেছেন এসব?' - ভয়াবহ সন্দেহ তার চোখে মুখে!
ব্লগোস্ফিয়ারে আমার পুর্ব পরিচিত কেউ নেই। এতিম অসহায়ের মত ব্লগিং করি আমি। আমি যেমন কাউকে চিনি না তেমনি কোন ব্লগারও সম্ভবতঃ আমার পরিচয় জানেন না। তাই ভাবছি আমার অফিস থেকেই 'আমি গল্পকার' এর প্রচার কাজ শুরু করব! (নিজেকে 'লেখক' ভাবতে ইচ্ছে করছে ইদানীং!) অফিসে আমার প্রায় ৪০ জন ইন্টারনেট ইউজার কলিগ! এদেও মধ্যে কেউ কেউ ব্লগার হয়ে গেলে আমার দলও ভারী হবে নিশ্চয়ই! তবে সবাইকে ব্লগিঙএর খবর দিয়ে দিলে কি হতে পারে তা নিয়ে একটু চিন্তিত আমি! অফিস ফাকি দিয়ে সবাই কি ব্লগিং করা বা গল্প পড়ায় মত্ত হবেন? এরকম হলে তো অফিসে কাজের বারোটা বাজবে! আর তাছাড়া সবাইতো আর আমার শুভানুধ্যায়ী নন। বরং উল্টোটা হবার সম্ভাবনাই বেশী (আমার অসামাজিক আচরনের কারনে!)। উপরন্তু খাদ্য ও খাদক শিরোনামের লেখাটা পড়ে দু একজন যে ভীষন রেগে যাবেন এতে কোন সন্দেহ নেই!
তো, যে প্রসঙ্গে এই ফালতু প্রলাপ তা হচ্ছে - কলিগ 'মামা' গল্পটি পড়ার পর আমাকে সেটা আরো বড় করার জন্য আইডিয়া দিয়েছেন! সেদিনই তিনি আমাকে বেশ উৎসাহ নিয়ে তার আইডিয়া জানালেন! তার চোখে মুখে নব্য আবিষ্কারের ছাপ!
তার আইডিয়া আমার কাছে ভালই মনে হয়েছে। আমি তার আইডিয়া অনুযায়ী মামা গল্পের দ্বিতীয় পর্ব লিখে ফেললাম।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment